Study in Norway

study in Norway

নরওয়েতে উচ্চশিক্ষার খুঁটিনাটি
উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ যেতে চান অথচ নরওয়ে সম্পর্কে জানেন না, এমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ইউরোপের এই দেশটিও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে উচ্চশিক্ষার গন্তব্য হিসেবে। কেননা, এখানে বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়েই নেই কোনো টিউশন ফি। উত্তর ইউরোপের এই দেশটি অনেকের কাছেই আবার নিশীথ সূর্যের দেশ হিসেবে বেশ পরিচিত।
বলে রাখা ভালো, এই দেশটির রাজধানীর নাম ‘অসলো’ এবং জাতীয় ভাষা হচ্ছে নরওয়েজিয়ান। দেশটিতে প্রায় সাড়ে ৫৪ লাখ মানুষের বসবাস কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে, প্রতি বর্গ কিলোমিটারে মাত্র ১৭ জন লোক বসবাস করে।
উচ্চশিক্ষার জন্য কী কী কারণে নরওয়ে আপনার গন্তব্যস্থল হতে পারে, তা পয়েন্ট আকারে দেওয়া হলো-
১. এটি একটি শান্তিপ্রিয় দেশ, ২. টিউশন ফি নেই (কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে), ৩. পড়ালেখা শেষে স্থায়ী হওয়ার সুযোগ, ৪. শিক্ষা অর্জনের পাশাপাশি পার্ট টাইম চাকরির সুবিধা, ৫. এখানে রয়েছে বিশ্বমানের শিক্ষাব্যবস্থা, ৬. রয়েছে ইংরেজিতে পড়ার সুযোগ। যারা শান্তিপ্রিয় মানুষ, তারা অবশ্যই নরয়েকে পছন্দের তালিকায় রাখতে পারেন।
নরওয়েতে যেসব বিষয়ে পড়তে যেতে পারবেন-
Civil Engineering, Urban Ecological Planning, Theology, Religion and Society, System Engineering, Sustainable Energy, Sustainable Architecture, Strategy and Management, Statistics, Renewable Energy, Public Administration, psychology, physics, Petroleum Engineering, Northern Studies, Neuroscience, Molecular Science, Media Studies, Mathematics, Finance, Marine Technology, Law, Logistics, Information and Communication Technology, Industrial Engineering, Aerospace Control Engineering, Animal Science, Applied Computer Science, Applied Economics, Aquaculture Biology, Biosciences, Business Administration, Chemistry, Data Science, Electrical and Power Technology, English, Environmental Engineering, Fluid Mechanics, Health Economy and Management
এছাড়াও নরওয়েতে পড়ালেখার জন্য প্রায় ৩২০টিরও বেশি কোর্স আছে এবং মাস্টার্সের জন্য রয়েছে প্রায় ৩০০টি কোর্স।
আবেদন করতে যেসব যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন
যেহেতু নরওয়েতে ব্যাচেলরের জন্য বাংলাদেশ থেকে ভিসা দেওয়া হয় না এবং সাবজেক্টও বেশ কম, সেহেতু আমরা কথা বলবো মাস্টার্স নিয়ে। মাস্টার্সের জন্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, যারা অনেক কোর্স অফার করে থাকে। নরওয়েতে উচ্চশিক্ষার জন্য আপনি যেই বিষয়েই পড়তে চান না কেনো, সে বিষয়ক কোর্স খুঁজে পেয়ে যাবেন।
দেখে নেই কোর্সগুলোতে আবেদন করতে আপনার কী কী প্রয়োজন
১. পাসপোর্ট, ২. আইইএলটিএস স্কোর ৬.৫, ৩. জিআরই/জিম্যাট স্কোর (কিছু কিছু কোর্সের জন্য চেয়ে থাকে), ৪, একাডেমিক সার্টিফিকেট, ৫. একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট, ৬. দুটি রিকমেন্ডেশন লেটার, ৭. মোটিভেশন লেটার, ৮. ব্যাংক স্টেটমেন্ট (প্রায় ১২ লাখ টাকা)।
নরওয়েতে কোনো টিউশন ফি নেই, তবে সেমিস্টার ফি রয়েছে, যা বাংলাদেশি টাকায় ৫/৬ হাজারের মতো। আবেদনের কোনো ফি নেই, আপনি চাইলে একাধিক কোর্সে ভর্তির আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা নেই, কারণ একেক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনের সময় একেক রকম দেওয়া থাকে। তবে সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে আবেদনের আহবান করে থাকে এবং পরবর্তী বছরের মাঝামাঝিতে ক্লাস শুরু করা হয়।
আবাসিক খাতে খরচ এবং পার্ট টাইম কাজের সুবিধা
আপনি যদি নরওয়েজিয়ান ভাষা জেনে থাকেন, তাহলে আবাসিক খাতের খরচ নিয়ে দুঃশ্চিন্তা করার দরকার নেই। সাধারণত সবকিছু মিলিয়ে কমবেশি ৫ হাজার ক্রোন খরচ হতে পারে। যারা বর্তমানে পরিকল্পনা করছেন নরওয়েতে পড়ার জন্য, তাদের উদ্দেশ্যে পরামর্শ থাকবে, নরওয়েজিয়ান ভাষার বেসিক কোর্স সম্পন্ন করে নেবেন। ভাষা জানা থাকলে পার্ট টাইম জব পেতে কোনো সমস্যা হয় না।
তাছাড়া আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজের সুযোগ দেওয়া হয়ে থাকে। ১৫/১৬ ঘণ্টা কাজ করে ৬০০০-৭০০০ নরওয়েজিয়ান ক্রোন আয় করা সম্ভব, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬০-৭০ হাজার টাকার কাছাকাছি। অনেকে এর চেয়ে বেশিও আয় করে থাকেন। তবে চাকরি পেতে অনেক ক্ষেত্রে ৩/৪ মাস ধৈর্য ধরা লাগে। বড় শহরগুলোতে জব পাওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে, আমি পরামর্শ দেবো, শিক্ষার্থীরা যাতে বড় শহরে যেতে চেষ্টা করেন। তবে ভাষা জানা থাকলে ছোট-বড় সব শহরেই পার্ট টাইম চাকরি পাওয়া যায়।
স্থায়ী বসবাসের সুযোগ-সুবিধা কেমন?
এদেশে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা শেষে চাকরি খোঁজার জন্য ভিসার সময় বর্ধিত করে দেওয়া হয়। উল্লিখিত সময়ের মধ্যেই চাকরি খুঁজতে হবে। তবে পড়ালেখা শেষে চাকরি না পেয়ে দেশে ফিরে গিয়েছে এমনটা খুবই কম ঘটে। যদি শিক্ষার্থীদের একাডেমিক রেজাল্ট এবং সফট স্কিল ভালো থাকে, তবে অবশ্যই চাকরির সুযোগ রয়েছে। সাধারণত তিন বছর পর স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করা যায়।
যাদের পিএইচডি করার ইচ্ছা রয়েছে, তারাও আবেদন করতে পারবেন। কেননা নরওয়েতে পিএইচডিকেও জব হিসাবে ধরা হয়। তাহলে সারকথা হচ্ছে, শিক্ষার্থীরা যদি দুই বছরের মাস্টার্স করেন এবং এক বছরের মধ্যে একটা জব অথবা পিএইচডির ব্যবস্থা করতে পারেন, তাহলে তারা স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *